Sunday, August 26, 2018

আমার সংগে আমার দেখা


আমার সংগে দেখা করবো বলে, সেই কবে থেকে
আমার পথের পাশে কাক-প্রতীক্ষায় দাড়িয়ে রয়েছি আমি।
এই পথ ধরে কত রুপালী চাদ হেঁটে হেঁটে
মেঘেদের কাছে চলে গ্যালো
ঝিকিমিকি নক্ষত্রেরা স্রোতস্বিনী নদীর মতো
মিশে গ্যালো ঊষার প্রথম আভায়।
রাতভর সহস্র উল্কাপিন্ড উঁকিঝুঁকি দিয়ে
সন্তর্পনে আমাকে পেরিয়ে গেল,
এই পথ ধরে।

দিনমান সূর্যেরা হেটে হেটে দিগন্তে মিলিয়ে গেল।
ফড়িংডানায় প্রজাপতিরা ভেসে ভেসে মিশে গেল
অসীম শুন্যতায়।
লাল, নীল, সবুজ, হলুদ কতো না রঙ্গের ফুল
নেচে নেচে চলে গেলো দুর বহুদুর
এই পথ ধরে।

প্রতীক্ষায় থাকতে থাকতে দেখা হয়ে গেল, ‘ভালোবাসা’র সংগে
নিরস নয়নে আমার দিকে তাকিয়েই
দ্রুত পা বাড়ালো আপন গন্তব্যে।
বেদনারা আমার সামনে দিয়ে হেটে যেতে যেতে
সোহাগী গলায় আমায় বললো
‘ভালো আছো তুমি?’
সুখ-পাখিরা এই পথে কতোবার এলো গ্যালো
একটিবারও তারা আমার দিকে ফিরেও তাকালো না।

এই পথে হেটে যাওয়া কত মানুষ,
কত বিচিত্র মানুষের সাথে দেখা হলো।
উদ্বেলিত, বিচলিত, শ্রান্ত, ক্লান্ত, ভ্রান্ত
নানান জাতের মানুষের সাথে
দেখা হলো এই পথে।

আমৃত্যু প্রতীক্ষায় থেকে সবার সংগেই দেখা হয়
শুধুমাত্র...
আমার সংগে আমার দেখা
হয় না কোনও কালে।
.........................
। ২৬আগষ্ট ২০১৮।
। রোববার।



Tuesday, December 26, 2017

নিরুদ্দেশ হয়ে যাবো একদিন!

একদিন আমি ঠিক ঠিক নিরুদ্দেশ হয়ে যাবো
আনমনা মেঘেদের মতো
পথভোলা পথিকের মতো
চলে যাবো তোমার নিমগ্ন দৃষ্টির শেষ সীমানায়।।



একদিন আমি তৃষিত জলকণা হবো
স্ফটিক স্বচ্ছতার জলবিন্দু ভেদ করে
সীমাহীন নিমগ্নতার বসবাস যেইখানে
ঠিক ঠিক চলে যাবো একা একা আনমনে।।

এই খানে খোজ না আমায়।
আমার অস্তিত্ব ছিলো এইখানে
এইখানে এই সবুজ মৃত্তিকায়
আমার পদচিহ্ন ছিলো
আমার নি:শ্বাসের নৈশব্দ ছিলো
বাম পাজরের গহীন মধ্যখানে
বেঁচে থাকা বেদনার সকরুণ হাহাকার ছিলো।।

একদিন আমি পরিব্রাজক পাখিদের
খসে পড়া পালক হবো।
সুদুর দিগন্ত হতে পতিত
শুভ্র সাদা পালকের তুষার কণা হয়ে
মিশে যাবো অসীম শুন্যতায়।।

একদিন আমি ঠিক ঠিক ধুলিকণা হবো।
অনন্তকাল সবুজ ঘাসের সাথে মিশে থেকে থেকে
অস্তিত্বহীন হয়ে যাবো হয়তোবা।
ক্রম ক্ষয়িষ্ঞু ভালোবাসার মতো
ভুলে যাওয়া অতীত হয়ে যাবো আস্তে আস্তে।

‘আমায় মনে রেখো’ মিনতি জানাবো না আজ
বরং অনুরোধ, ভুলে যেও সব
এইসব আনন্দ, বেদনা, হাসি-কান্না, ভালোবাসা স-ব।
সেই ভালো,
যা কিছু আনন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসা
শুধুই তোমার জন্য

অবশিষ্ট প্রবঞ্চনার যাবতীয় দায়ভার নিয়ে
একদিন আমি ঠিক ঠিক নিরুদ্দেশ হয়ে যাবো।
হয়তোবা আর ফিরবো না কোনদিন
নয়তোবা, ফেরা হবে না কখেনোই।
....................................
। ২৬ ডিসেম্বর ’১৭।
No automatic alt text available.

কী তুই আমার?

গলায় মালা তুই যে আমার
                            গলার কাটাও তুই
কাটার ব্যথা হজম করে
                          মালাই পরে রই।।


রইতে নারি সইতে নারি
                       রই তবু নিশ্চুপ
বুকের ভিতর কষ্ট পাহাড়
                        ভালবাসি খুব।।

কখনো তুই বুক তোলপাড়
                     সুখের ঝড়ে কাঁপা
তু্ই-ই আবার মরণ ছোবল
                   জীবন দরে মাপা।।

যন্ত্রণাময় এই জীবনে
                  তুই-ই সুখের ছোঁয়া
বুকের ভেতর তুষের আগুন
                 তুই তো তারই ধোয়া।।

খুশির লহর যায় যে বয়ে
               একটুকু তোর হাসি
তুই তো আমার আধার ভুবন
              গলায় মরন ফাঁসি।।

জানিস কী তুই আমার বয়স
                 সত্তুর পেরুলো
সুখ না কি তুই দু:খ আমার
     জানতে জনম গ্যালো।।
................................................
১৮ ডিসেম্বর ২০১৭।  সোমবার

No automatic alt text available.

Thursday, December 7, 2017

আমায় খুঁজি আমি


শুকনো ডাঙ্গায় একহাটু জল
সেই জলেতেই নামি।
আমার মধ্যে বাস করে যে
সেই আমি নই আমি।।

বুকের জমিন চাষ করে যে
তাঁরে কোথায় পাই?
তন্ন তন্ন এ’ তিন ভুবন
নাই সে তো নাই নাই।।

অচল বায়ুর সচল হাওয়ায়
যে যায় উড়ি উড়ি।
লাটাই টা তো তারই হাতে
আমার ঘোরাঘুরি।।

হলুদ কালোয় আঁধার আলোয়
জ্বালায় যে জন বাতি।
না যায় ধরা, যায় না ছোঁয়া
সেই তো আমার সাথী।।

আলো তোমার মঞ্চ তোমার
নায়ক শুধুই আমি।
নাচাও তুমি কাদাও তুমি
এমনিই আমি দামী।।

ডানের দিকে চাই যে যেতে
বাম দিকেতে সরি।
আমায় চালান যেই মহাজন
তাকেই খুজে মরি।।

আমার ‘আমি’র অনেক বড়াই
করছি দিবসযামী।
প্রাণ প্রদীপের তেল ফুরোলেই
এই আমি নই আমি।।







Tuesday, December 5, 2017

যতিচিহ্নময় ভালোবাসা

প্রিয়তমা
আমার সর্বস্ব উজার করে তোমাকে ভালবাসতে পারবো না
প্রগাঢ় ভালোবাসায় ঠিক যে জায়গায় যতিচিহ্ন প্রয়োজন
তোমাকে ভালোবাসবো ততটুকুই
তুমি আমায় ক্ষমা করো।


সর্বস্ব উজার করে দিলে থাকে না কিছুই
না স্বর্গ, না মর্ত, না তুমি না আমি
থাকেনা বৃক্ষ, ঘুম ঘুম চাঁদ
জানালায় দাড়ানো মায়াবী আধার
বুকের গভীরে জমানো ভালোবাসার উষ্ণ নদী
তারও গহীনে যেখানে তোমার বসবাস।

পৃথিবীর যাবতীয় সুন্দর শব্দমালা
ততোধিক সুন্দর করে পাশাপাশি যতিচিহ্নহীন সাজালে বাক্য হয় না
যতিচিহ্নহীন চলতে থাকলে পৃথিবীর তাবৎ নদী
পায়না সমুদ্র কখনোই
পৃথিবীর সকল পথ যতিচিহ্নহীন চলতেই থাকলে
রাজপথে মেশে না কোনদিন
যতিচিহ্ন না থাকা মানেই নিষ্ফল শুন্যতা
যতিচিহ্নহীনতা মানেই উদ্দেশ্যহীন অনন্ত যাত্রা।

সর্বস্ব উজার করা ভালোবাসা শুধুমাত্র মিথ্যের বেসাতি
কল্পনার রং মেশানো প্রবোধমাত্র
যতিচিহ্নহীন ভালোবাসা স্বর্গীয় প্রেমের বিপরীত প্রবাহ
নিয়তই বাধাগ্রস্থ করে ভালোবাসার পবিত্রতা।

জঞ্জালময় ভা‌লোবাসার এই নষ্ট পৃ‌থিবী‌তে
তু‌মি আমায় য‌তোই স্বার্থপর ব‌লোনা কেন
আমার সর্বস্ব উজার করা যতিচিহ্নহীন ভালোবাসা
তোমায় দিতে পারবো না, প্রিয়তমা
প্লিজ, তুমি আমায় ক্ষমা কোরো।

Sunday, November 19, 2017

তোমার প্রতীক্ষায় অবিনাশী আয়োজন


তোমার প্রতীক্ষায় থাকতে থাকতে
নিরানব্বইটা দাড়কাক একশ একবার কা-কা করে
অস্তাচলে ডুবে গেল।


বত্রিশটা প্রজাপতি একশ তেত্রিশ বার গুঞ্জন তুলে
বিরহী বাতাসের মেঘ ছড়ালো ছাই রঙ্গা আকাশে
আসমুদ্র দিগন্তে তখন কেবল কুয়াশা
দিনের অসহ্য আলোয় আধিয়ার চারিদিকে।


তেত্রিশটা পিঁপড়ার একটা দীর্ঘ সেনাদল
কুচকাওয়াজ করতে করতে এসে থেমে গেল পায়ের কাছে
বিজয়ী সেনাদলের পিছনে পড়ে থাকা
মৃত্যু, হাহাকার আর আর্তনাদের করুণ রাগিণী
স্তব্ধ করে দিল চারদিকের যাবতীয় কোলাহল, জয়গান জীবনের।


সে-ই কোথাকার তিনটে মৌমাছি
শুকনো ডাঙ্গায় মনের ভুলে পাল তুলে
গাইলো নয়টি বিচ্ছেদী কীর্তণ আর নাচতে নাচতে
কোমল দূর্বাদলে মিশে গ্যালো।


দিগন্ত ঢেকে দেয়া গাছটির একশ’ তিনটি পাতা
বিষন্নবাতাসে একলক্ষ নুপুরের তান তুলে
আবেগী হাওয়ায় ভেসে গ্যালো হিরন্ময় সন্ধ্যাতারা হয়ে।


একটি সূর্য একশ’ কোটি তারার প্রদীপ জ্বালিয়ে
যাদুকরের ঝাপি কবুতরের মতো অদৃশ্য হয়ে গ্যালো চিরতরে
একবার-দুইবার-তিনবার-সহস্রবার।


সুর্য, মৌমাছি, প্রজাপতি, পিপড়ে, দাড়কাক
সব্বাই একে একে অদৃশ্য হয়ে গ্যালো
তোমার প্রতীক্ষায় শুধু আমি
অবিনাশী বৃক্ষ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম জন্ম জন্মান্তর।


 


Sunday, November 5, 2017

আঁচল সরাও মেঘ বালিকা

মেঘ বালিকা মেঘ আঁচলে ঢাকছো কেন মুখ
তাকিয়ে দেখো আজ পৃথিবীর বড্ড বেশী অসুখ।

নষ্ট আচার ভ্রষ্টাচারে বিপন্ন আজ জমিন
আকাশ জোড়া পাগলা ঘোড়া শুভ্র সাদা মলিন
ছুটো মানুষ ফুটো ফানুস সবগুলো মুখ কালি
ধ্বস্ত বাগান মস্ত ঝড়ে, শুন্য হাতে মালি।

খালি চোখে দুর দিগন্তে আবছা সবই আধার
ঠিক আছে চোখ, নেই ক্ষমতা স্বচ্ছ কিছু দেখার
দেখবো সাদা দেখি আঁধার কিংবা দেখি কালো
ভাবছি সহজ করছি সরল হচ্ছে এলোমেলো।

ভ্রষ্ট যারা সামনে তারা তারাই দেখান পথ
শুদ্ধ যারা নিখোঁজ তারা, যাদের ভিন্নমত
শিখবো আরও জানবো অনেক নিয়েছি যার সংগ
শেখান তিনি অন্য কিছু দেখান খারাপ রঙ্গো।

মেঘ বালিকা, মেঘ আড়ালে থাকবে কতো আর?
রুখে দাড়াও নষ্ট কিছু, রোখো ভ্রষ্টাচার।
তুমিই পারো রুখতে এসব তাবৎ ব্যাভিচার
শুভ্র সাদা পৃথিবীর জন্য
তোমার খুউব দরকার।